স্কুলে শিবির, ঢাবিতে ছাত্রদল করতেন সাংবাদিক শাকিল: ফেসবুকে অলিউল্লাহ নোমান

রাজধানীর আদাবরে পোশাকশ্রমিক হত্যা মামলায় কারাগারে রয়েছেন চাকরিচ্যুত একাত্তর টিভির সাবেক বার্তা প্রধান শাকিল আহমেদ। তাকে নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য জানিয়েছেন আমার দেশ পত্রিকার বিশেষ প্রতিনিধি অলিউল্লাহ নোমান।

মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) রাত ১১টা ৪৪ মিনিটে নিজের ভেরিফায়েড ফেসুবক পেজে দীর্ঘ স্ট্যাটাস দেন অলিউল্লাহ নোমান। তার স্ট্যাটাসটি নিচে হুবহু দেওয়া হলো:

ফারজানা রূপার স্বামী শাকিলকে চিনতাম ছোটবেলা থেকে। আমার কয়েক বছরের জুনিয়র। তার স্কুল জীবনটা কেটেছে আমাদের এলাকায়। তার বাবা আমাদের এলাকায় একটি টেক্সটাইলে প্রশাসনিক কর্মকর্তা ছিলেন। বেশ পরহেজগার এবং ভাল মানুষ ছিলেন তিনি। তাদের সাথে আমাদের পারিবারিক একটা সম্পর্ক ছিল। এই সুবাদে তাদের বাসায় নিয়মিত যাতায়াত ছিল আমার।

শাকিলকে দেখতাম ছোটবেলায় পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তে। অত‍্যন্ত ভদ্র ছেলে ও নামাজি। স্কুলে ভালো ছাত্র হিসাবে এলাকায় পরিচিত। ক্রিকেট খেলতেও দেখেছি।

একটি ভালো ছেলেও নৈতিক দিক থেকে এতটা অধঃপতন হতে পারে শাকিলকে না দেখলে বোঝা যেত না। শাকিল আমাকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে কীভাবে একটা ভালো ছেলের নৈতিক অধঃপতন ঘটে।

শাকিল স্কুলে ভালো রেজাল্ট করে ১৯৯০ সালে ঢাকা কলেজে ভর্তি হয়। আমি তখন বিএ পরীক্ষা দিয়েছি। মাস্টার্স পড়তে ঢাকায় এসে জানলাম শাকিল ছাত্রদল করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। যদিও স্কুলে থাকতে দেখতাম শিবির করতে।

শাকিলের সাংবাদিকতা শুরু মুক্তকণ্ঠ দিয়ে। তখনো সম্ভবত ছাত্রজীবন শেষ হয়নি। মুক্তকণ্ঠ ছিল বেক্সিমকোর পত্রিকা। প্রখ‍্যাত ও প্রবীন সাংবাদিক কে জি মোস্তফা ছিলেন সম্পাদক। পত্রিকাটি বড় বাজেটে শুরু হলেও বেশি দিন টিকেনি।

সাংবাদিকতার সুবাদে দেখা হত তখন। আমি সবুজ বাংলা থেকে ততদিনে ইনকিলাবে। শাকিলও মুক্তকণ্ঠ থেকে একুশে টেলিভিশনে। প্রথম বেসরকারি চ‍্যানেল ছিল একুশে টেলিভিশন। একরকম স্টার সাংবাদিক শাকিল।

শাকিলের স্ত্রী ফারজানা রূপাকে চিনতাম দৈনিক মাতৃভূমির বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার হিসাবে। পর্যায়ক্রমে চ‍্যানেল আই/এটিএন হয়ে একপর্যায়ে ৭১ টিভি। শেখ হাসিনাকে ম‍্যাজিকের লেডি হিসাবেও তেলমারা খেতাব দিতে দেখেছি সংবাদ সম্মেলনে।

রূপার ম‍্যাজিকের লেডি পালিয়ে ভারতে চলে গেছেন। আর রূপা বন্দি কারাগারে। তার উপস্থাপনা এবং আওয়ামী ফ‍্যাসিবাদের বন্দনা দেখে তখন ভাবতাম হায় রে সাংবাদিকতা! ওরাই পেশাটাকে কলঙ্কিত করেছে।

শোনা যায় এই সাংবাদিক দম্পতি এখন হাজার কোটি টাকার মালিক। আমি আসলে অথর্ব। তাদের আগে পেশায় যোগ দিয়ে প্রথম শ্রেণির বেতন-বোনাসের পত্রিকায় চাকরি করেও দিন আনি দিন খাই অবস্থা। পারিবারিক হাটবাজারের খরচের বাইরে এক পাউন্ড অতিরিক্ত খরচ করতে পাঁচবার ভেবে মাসিক আয়-ব‍্যয়ের হিসাব মিলাতে হয়। সাংবাদিকতা পেশায় তাদের হাজার কোটি টাকার সম্পদ যেন রূপার বয়ান অনুযায়ী শেখ হাসিনার ম‍্যজিক থেকে পাওয়া!!